সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আইফোনই কেন? কি আছে আইফোনে আর এর দামই বা এত বেশি কেন?

Ads Inside Post

সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আইফোনই কেন? কি আছে আইফোনে আর এর দামই বা এত বেশি কেন?

বিশ্বজুড়ে মুঠোফোনের দুনিয়ায় রাজত্ব করছে টেক জায়ান্ট আপেলের আইফোন। নতুন মডেলের অপেক্ষায় থাকেন পৃথিবীর কোটি কোটি প্রযুক্তিপ্রেমী, বছরে কয়েকটি সংস্করণের মুঠোফোন বাজারে আনলেও মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় স্টক।

নতুন সিরিজ নতুন ডিজাইনের ফোন হাতে পেতে এপেল স্টোর এর সামনে দীর্ঘ লাইনো পড়ে যাই। দোকান খুলবে দশটায় অথচ ভোর থেকেই ক্রেতাদের লম্বা লাইন দিতে দেখা গেছে আপেলের স্তরের সামনে।

সব ঠিক আছে কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এত জনপ্রিয় কেন আইফোন? তাছাড়া বাজারে থাকা মুঠোফোনের দামের সাথে এর তুলনা করলে বিস্তর ফারাক দেখা যায়। এরপরও আইফোন কেনার জন্য সবাই কেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে?
আইফোনের জনপ্রিয়তার পিছনের কারণ গুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনটিতে আশা করছি মন দিয়ে দেখবেন এবং পড়বেন।


১। আইফোন এবং অন্যান্যর নকশা।


অনন্য নকশা এবং অভিনবত্বের বৈশিষ্ট্যের কারণে যেকোনো মুঠোফোন থেকে সহজেই চিহ্নিত করা যায় কোনটি iphone। নজর কাড়া ডিজাইন তো রয়েছেই সেই সঙ্গে একটি মাত্র বাটন দিয়েই আইফোনে নিজস্বতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানটি।

এই একটি মাত্র বাটন দিয়ে ফোনের মেইন মেনুতে প্রবেশ করা যায় অন্যান্য স্মার্টফোনে বিশেষ করে এন্ড্রয়েড ফোনে একাধিক বাটন লক্ষ্য করা যায়। অনেকের কাছে এই একাধিক বাটন বাড়তি ঝামেলার কারণ, তাছাড়া আইফোনের গ্রাফিক্স ইন্টারফেস অর্থাৎ ফোনে প্রবেশ করে যেসব অভিজ্ঞতা একজন গ্রাহক নেন। তা নির্দ্বিধায় বলা যায় অন্য অন্য যেকোন স্মার্টফোন থেকে আলাদা।

আইফোনের বাইরের নকশার পাশাপাশি ফোনটি কিভাবে চলছে সেই নকশার উপর ও জোর দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই সকল কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই কোটি কোটি প্রযুক্তি প্রেমের মন কেড়ে নিয়েছে আইফোন, আর সফটারেও পলিশ এবং স্মুথ অভিজ্ঞতা পায় গ্রাহকরা।

প্রযুক্তিপ্রিয় মানুষের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে অ্যাপেলের এমন ডিজাইন ল্যাঙ্গুয়েজ মধ্যতার প্রতীক বলা যায়।


২। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।


ডিজিটাল এর যুগে প্রায় ব্যক্তিগত তথ্যসহ অনেক গোপনীয় তথ্য সহজে সামাজিক মাধ্যম সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে একজন আইফোন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য এত সহজ নয়, বরাবরই নিজেদের প্রোডাক্টগুলোতে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে আসতেছে আপেল।

আই ফোনের ক্ষেত্রেও এর কোন ব্যতিক্রম নয়, আর একজন হ্যাকার চাইলেই সহজে একজন আইফোন ব্যবহারকারীর তথ্য হ্যাক করতে পারবেন না। আইফোন হ্যাক করা বা অনুমতি ছাড়া আইফোনের ডাটা বের করা আপাতত দৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভব।

এমনকি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর মতো সুদক্ষ একটি সংস্থা কয়েক বছর আগে এক সন্দেহ ভাজনের আইফোনের লক খোলার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত খুলতে না পেরে অ্যাপেলের দ্বারস্থ হতে হয় এফবিআইকে।

তবে আরো মজার ব্যাপার হল-অ্যাপেল কর্তৃপক্ষ সেই লক কিন্তু খুলে দেয় নি। অর্থাৎ তারা একজন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

তাই অ্যাপেলের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার এই বিষয়টির কারণেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের পছন্দের প্রথম দিকে অ্যাপেলের মুঠোফোন। মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলা হয় অ্যাপলের আইওএস।

আবার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে খুব সহজেই থার্ড পার্টি অ্যাপ ঢুকে পড়ার ঝুঁকি থাকে। তবে অ্যাপেলের অ্যাপ শুধুমাত্র apple store থেকেই ইন্সটল করা যায়।
যে কারণে গড়পড় তা ভাইরাস এর ঝুঁকি iphone তুলনামূলকভাবে একেবারেই কম।
এছাড়াও আইফোন হারিয়ে গেলে ফাইন্ড মাই ফোন ফিচারটি ব্যবহার করে খুব সহজেই হারানো আইফোনের লোকেশন খুঁজে বের করা যায়।


৩। নিজস্ব হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার।

অন্য সকল মুঠোফোন যেখানে তৃতীয় পক্ষের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে সেখানে নিজেরাই হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার বানাই এপেল। প্রসেসর জ্যাম বডি ক্যামেরা মোটামুটি সব কিছুই অ্যাপেলের নিজস্ব, তাই ব্যবহারকারীর চাহিদা মাথায় রেখে গুণগত মানের দিক থেকে কোন অংশেই ছাড় দিতে রাজি নয় এপেল।

অ্যাপেলের এই বৈশিষ্ট্য তার জনপ্রিয় তার পিছনের অন্যতম একটি কারণ।


৪। অপারেটিং সিস্টেমে নতুনত্ব ও চমক।

একটি আইফোন বা স্মার্টফোন দিয়ে কথা বলা থেকে শুরু করে আধুনিক দুনিয়ার প্রযুক্তিগত প্রায় সব কাজ করা গেলেও আইফোনের জনপ্রিয়তার আরেকটি বড় কারণ আইফোনের যে নিজের শো অপারেটিং সিস্টেম, সেটিতে নতুনত্ব সংযোজন।

আর এই ফিচারটির কারণেই মূলত নতুন সিরিজ এর আইফোনের জন্য পাগল পারা হয়ে থাকেন অ্যাপেল প্রেমীরা। আইফোনের প্রতিটি নতুন অপারেটিং সিস্টেমে নিত্য নতুন সব চমকে ঠাসা থাকে। তাদের ওএসে কিছু গোপন ফিচার দিয়ে অ্যাপেল সবসময় অ্যাপল ব্যবহারকারীদের চমক দিয়ে আসছেন


৫। অ্যাপেল ইকো সিস্টেম।

অ্যাপেল ইসকো সিস্টেম হল একাধিক আপেল ডিভাইস যুক্ত একটি পরিবেশ। যেখানে একাধিক অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন এর ব্যবহারকারীরা।

যেমন একজনের কাছে যদি apple এর আইফোন ও ম্যাকবুক থাকে সেক্ষেত্রে এই দুইটি ডিভাইসের ফাইল আদান প্রদান করা একেবারেই সহজ।

এমন কি আইফোনে কল আসলে ম্যাকবুকে কাজ করা অবস্থাতেও ম্যাকবুক থেকেই কল রিসিভ করে কথা বলা যায়। অ্যাপেল ওয়াচ বা অ্যাপেলের হাত ঘড়ির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

অ্যাপেলের তৈরি এই অসাধারণ ইকো সিস্টেমের কারণেই প্রতিটি অ্যাপেল ডিভাইস একটি আরেকটি সঙ্গে খুব ভালোভাবেই কাজ করে। একটি অ্যাপেল ইকো সিস্টেম ব্যবহারকারী জীবনকে একেবারে সহজ করে দেয়, মূলত এই কারণেই জনপ্রিয়তা তুঙ্গে আইফোন।


৬। বিক্রয়োওর সেবা


অ্যাপেলের ডিভাইস বা আইফোন কেনার বছরের পর বছর গেলেও অ্যাপেল সার্ভিস সেন্টার থেকে খুব সহজেই সেবা পাওয়া যায়। যার ফলে আইফোনে সমস্যা দেখা দিলেও অ্যাপেল সার্ভিস সেন্টার থেকে যেকোনো সময় সমাধান পাওয়া সম্ভব।

শুনতে অবাক করা হলেও এটাই সত্য যে ২০১৫ সালের রিলিজ হওয়া আইফোন ৭ ব্যবহারকারীরা এখনো নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট পান। অনেক বছর ধরে আপডেট পাওয়ার কারণে পুরনো মডেলের ফোনগুলো ও নতুন নতুন সব ফিচারের ছোঁয়া পেয়ে নতুনের মতই কাজ করে।


৭। আইফোনের দাম এত বেশি কেন?

প্রথমত আইফোন যে অপারেটিং সিস্টেমে চলে সেটি তাদের নিজেদেরই বানানো, অন্যান্য মুঠোফোন কোম্পানিগুলো এন্ড্রয়েড বা অন্য কোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। যে কারণে তাদের খরচও কম পড়ে।

তবে অ্যাপেল নিজের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার পাশাপাশি নিজস্ব সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে অনেক বেশি খরচ করে থাকে। আর তারই ধারাবাহিকতায় ফোনের দামও অনেক বেশি বেড়ে যায়।

আবার অ্যাপেলের প্রসেসরও নিজেদের বানানো যা অন্য কোম্পানির প্রসেসর এর চেয়ে অনেক বেশি ফাস্ট এবং দ্রুত কাজ করে। অ্যাপেল সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বেশিরভাগ সময় সবচেয়ে ভালো স্যাম্পল নেয়ার চেষ্টা করে আর যার কারনে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়া সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কারণেও বছরের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে মুঠোফোন নির্মাতা কোম্পানি অ্যাপেল। আর এই সকল কারণেই বেশি দামে বিক্রি করতে হয় তাদের, তাছাড়া ফ্লাগশিপ প্রোডাক্ট যার কারণে অ্যাপেলের পণ্যের দাম বেশি। অর্থাৎ মিডিয়াম বা নিম্ন দামের স্মার্টফোনের মার্কেটে অ্যাপেল প্রতিযোগিতা করে না।

আপেলের সঙ্গে অন্যান্য যে সকল স্মার্টফোন কোম্পানি প্রতিযোগিতা করে তা অনেকটা কাছাকাছি দামের যেমন গুগল পিক্সেল ৪ এর দাম আইফোনের দামের খুবই কাছাকাছি। ম্যাক বুকের সঙ্গে মাইক্রোসফট সারফেস এর দাম এর পার্থক্য খুব একটা বেশি নয়।

অনেকদিন পর পোস্ট লিখতে বসেছি বানানের অবস্থা বেসামাল। তাই কোথাও বানান ভুল লক্ষ্য করলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

অনলাইন রিলেটেড যে কোন সমস্যায় নক করুন- https://www.facebook.com/fanAnamika

ভালো লাগলে লাইক করে দিতে পারেন শেয়ার করে বন্ধুদের কাছে ছড়িয়েও দিতে পারেন আজকের মত এ পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।

The post সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আইফোনই কেন? কি আছে আইফোনে আর এর দামই বা এত বেশি কেন? appeared first on Trickbd.com.






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ