Freelancing – Startup – Scale-Up
যে কোন ব্যবসা প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু করতে হয়। সেখান থেকে সফল হওয়ার পরে সেই ফ্রিল্যান্সিং বিজনেস টাকে স্টার্টআপ এ পরিণত করতে হয়। তারপরে সেই স্টার্টআপকে Scale-Up করতে হয়।
অর্থাৎ এখানে আপনাকে তিনটা ধাপ অনুসরণ করতে হবে –
- Freelancing
- Startup
- Scale-up
এটা হচ্ছে একটা প্রিন্সিপাল মানে নীতি।
আপনি এই নীতির বাহিরে যেতে পারবেন না। যদি এই নীতির বাহিরে যেতে চান তাহলে আপনি সেখানে সফল হতে পারবেন না অর্থাৎ আপনাকে ধাপে ধাপে আগাতে হবে ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু এবং সেখান থেকে তৈরি করতে হবে স্টার্টআপ তারপরে করতে হবে Scale-Up ।
আমি একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি,
ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন এ অনেক দক্ষ এবং অনেক প্যাশন আপনার আছে এই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর উপরে।
এখন আপনি এই গ্রাফিক্স ডিজাইন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে ভাল ইনকাম করা শুরু করলেন। আপনার ইনকাম দিয়ে আপনার জীবন যাপন ভালোভাবে চলার পরও কিছু টাকা সেভিংস করতে পারছেন।
এখানে আপনি দু-তিনজন টিম মেম্বার দিয়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং বিজনেস কে পরিচালনা করতে পারেন।
এই অবস্থা থাকা মুহূর্তে আপনি দেখছেন আপনার সার্ভিসের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে যেখানে আপনি মাসে 50 থেকে 100 টা কাস্টমারের চাহিদা পূরণ করছেন কিন্তু আপনি দেখতে পারছেন যে আপনার কাস্টমার এর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে এবং আপনার কাস্টমারকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য নতুন নতুন টিম মেম্বার এর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।
যখন আপনি পূর্বের তুলনায় বেশি সংখ্যক কাস্টমারকে একবারে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন তখন আপনার ব্যবসাটাকে আর ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা বলা হবে না। তখন আপনাকে একটা কোম্পানির নামে নিবন্ধন করে ব্যবসাটাকে স্টার্টআপ এ পরিণত করতে হবে অর্থাৎ এখন আপনি আগের থেকে আরও 10 থেকে 15 গুণ কাস্টমারকে সার্ভিস দিচ্ছেন এবং আপনার কোম্পানির ইনকাম এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ধরেন আপনি একটা ছোট কম্পানী দিয়ে বসলেন, শুরুতে যখন ফ্রিল্যান্সিং করতেন তখন আপনার ইনকাম থাকতো মাসে 30 থেকে 40 হাজার টাকা কিন্তু এখন আপনি যেহেতু একটা স্টার্টআপ তৈরি করেছেন তার মানে আপনি এখন মাসে কমপক্ষে হলেও 500 থেকে 1000 জন মানুষকে সার্ভিস দিচ্ছেন বা তারও বেশি মানুষকে সার্ভিস দিচ্ছেন।
তাহলে এখন আপনার কোম্পানির ইনকাম মাসে হবে 5 থেকে 15 লাখ টাকা এভাবে আপনি এই স্টার্টআপে সফল করে আস্তে আস্তে কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী আপনি কোম্পানিকে বড় করে যাচ্ছেন এবং নতুন নতুন মার্কেটে সুযোগ খুঁজছেন সেখানে প্রবেশ করার জন্য।
ধরেন প্রথমে আপনি লোগো ডিজাইন করতেন এবং লোগো ডিজাইন এর উপরে ফ্রিল্যান্সিং থেকে সফল হওয়ার পরে স্টার্টআপ এ পরিণত হয়েছিলেন কিন্তু এখন আপনি যখন আপনার ব্যবসাকে scaleup করবেন তখন আপনি লোগো design মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না তখন আপনি টেম্পলেট ডিজাইন করবেন অর্থাৎ এটা একটা নতুন মার্কেট, আপনি কার্টুন ক্যারেক্টার ডিজাইন করবেন এটা একটা নতুন মার্কেট, আপনি আইকন ডিজাইন করবেন এটা একটা নতুন মার্কেট এবং গ্রাফিক্স রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের সফটওয়ার এবং টুলস তৈরি করে বিক্রি করা শুরু করবেন এগুলো হচ্ছে সব নতুন মার্কেট।
অর্থাৎ আপনি আর আগের লোগো ডিজাইনের ব্যবসায় নাই আপনি গ্রাফিক্স সম্পর্কিত আরো নানান ধরনের নতুন মার্কেটে প্রবেশ করছেন অর্থাৎ শুরুতে আপনার ছিল দুই থেকে তিনজন টিম মেম্বার এর একটি ব্যবসা আর এখন কয়েকশো টিম মেম্বার কাজ করছে এবং আপনি নিজ অঞ্চলের সার্ভিস দেওয়ার পরেও বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সার্ভিস দিচ্ছেন।
আর এভাবেই আপনি প্রথম দুটো ধাপ অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এবং স্টার্টআপ থেকে আপনার বিজনেস কে scaleup এ পরিণত করে ফেলবেন।
উদাহরণ হিসেবে http://canva.com তারা আজকে পুরা পৃথিবীতে তাদের বিজনেস সম্প্রসারণ করতে পেরেছে যাদের মান্থলি ইনকাম বাংলাদেশি টাকায় 200 কোটি টাকার উপরে।
এবং যাদের মার্কেটে 2.5 লাখের উপরে মান্থলি একটিভ কাস্টমার রয়েছে এবং তারা এখান থেকে রেকারিং রেভিনিউ মডেল জেনারেট করতে পারছে অর্থাৎ এমন একটি ইনকামের রাস্তা তৈরি করে ফেলেছে যা তাদেরকে নিয়মিতভাবে আয় রোজগারের আয়োজন করে দিচ্ছে।
এতকিছু আপনি তখনই সম্ভব করতে পারবেন যখন আপনার Technical Skill এর সাথে সাথে Business Skill এর উপরে বেশি করে মনোনিবেশ করতে হবে।
আপনি যদি শুধুমাত্র টেকনিক্যাল স্কিল নিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে প্রথম ধাপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। জীবনে বেশি দুর এগোতে পারবেন না মানে ওই ফ্রিল্যান্সিং বিজনেসের গন্ডিতে কিন্তু আপনি যখনই বিজনেস স্কিল এবং পিপলস স্কিল তৈরি করা শুরু করবেন তখন আপনি আনলিমিটেড ইনকামের রাস্তা তৈরি করতে পারবেন।
একটা চিরন্তন সত্য কথা মনে রাখবেন সেটা হচ্ছে
“Clarity is Superpower”
আপনার যদি কোন বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকে তাহলে আপনি সেই বিষয়ে উন্নতি করতে পারবেন না। যে অবস্থায় আছেন সে অবস্থায় থেকে যাবেন।
অর্থাৎ আপনি যদি নাই জানেন যে এক ধাপ থেকে আরেক ধাপ এ যাওয়ার জন্য আমাকে কোন কোন বিষয়ের উপরে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে তাহলে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না আপনার সমৃদ্ধি হবে নিশ্চিত।
এখন যে প্রশ্ন আসে কিভাবে ফ্রীল্যান্সার হব?
কিভাবে সফল ফ্রিল্যান্সার হবো?
একজন ফ্রীল্যান্সার হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করা। এটি শুধুমাত্র আপনাকে আরও ক্লায়েন্ট খুঁজে পেতে সহায়তা করবে না, তবে এটি আপনাকে আপনার ইন্ডাস্ট্রি এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে আরও জ্ঞানী হতে সাহায্য করবে।
যেমন আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন, তাহলে সেই ইন্ডাস্ট্রি এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনি অনেক বেশি জানতে পারবেন।
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য বেসিক যে বিষয়গুলো দরকার সেগুলো খুব সাধারণ, কিন্তু অনেকেই তা করে উঠতে পারে না। সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ধাপ অবলম্বন করতে হবে, আর শুধুমাত্র সফল ফ্রিল্যান্সারের জন্য না যেকোন ক্যারিয়ারে সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধাপ অবলম্বন করতেই হবে।
(১) একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরি করা:
একজন ফ্রিল্যান্সার তখনই সবথেকে বেশি সফল হবে যখন তার একটি প্রফেশনাল মানের পোর্টফোলিও থাকবে। ওয়েবসাইট, পিপিটি, পিডিএফ ডকুমেন্ট, থার্ড পার্টি একাউন্টস ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে অবশ্যই পোর্টফলিও খুলে রাখতে হবে।
পর্টফলিওকে প্রফেশনাল করার জন্য একজন ভালো ডিজাইনের সহায়তা নিতে হতে পারে। আপনি কি সার্ভিস দিচ্ছেন এবং আপনার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্লাইন্ট কতটা উপকার পাবে সে বিষয়টার উপরে সবথেকে বেশি ফোকাস দিতে হবে।
(২) সঠিক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম খুঁজে বের করতে হবে:
মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করতে পারেন অথবা নিজেই একটি ছোট বিজনেস শুরু করে দেওয়ার মাধ্যমে কাজ করতে পারেন। জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার।
এছাড়া প্ল্যাটফর্ম সংক্রান্ত সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ রয়েছে সেখানে যুক্ত হয়ে এই সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য এবং জ্ঞান সংগ্রহ করতে পারেন।
(৩) কাজে সংঘটিত হতে হবে এবং ক্লায়েন্টের ডেলিভারিতে আন্তরিক হতে হবে:
অবশ্যই যে কাজটি সবথেকে বেশি ভালো এবং দক্ষতার সাথে করতে পারবেন সে কাজগুলোকে সবার আগে গ্রহণ করবেন এবং সময়ের আগে ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ক্লায়েন্টের কাজ করার আগে ক্লাইন্টকে এত সুন্দরভাবে ডেমো কাজ দেখিয়ে দিতে হবে যাতে আপনার ডেমো দেখে পছন্দ করে ফেলে।
(৪) পোর্টফোলিও কে প্রমোট করতে হবে:
আপনি কি কি কাজে দক্ষ সে কাজের একটা পোর্টফোলিও তৈরি করার কথা প্রথমেই বলা হয়েছে, এখন এই ধাপে আপনার পোর্টফোলিওকে প্রমোট করতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটারদের সহায়তা নিতে হবে।
(৫) নিয়মিত নতুন স্কিল শিখতে হবে:
বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা এই জায়গায় কাজ করতে চান না, এই ধাপটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। নিজেকে নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে এবং নতুন নতুন দক্ষতা গুলোকে শিখে রাখতে হবে।
আপনি যদি ভাল ফেসবুক মার্কেটিং পারেন, আপনাকে ইমেইল মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মার্কেটিং ভালোভাবে শিখে ফেলতে হবে।
উপরের এই পাঁচটি ধাপ অনুসরণ করুন এবং শুরু করে দিন আপনার স্বপ্নের ফ্রিল্যান্সিং জার্নি। আসা করা যায় আপনি সফল হবেন । আমি নিজে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং এপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করছি এবং মাত্র ই সফলতার আলো পাচ্ছি হালকা হালকা । আশা করা যায় খুব দ্রুতই সফল হব ।
Love more
10 most common mistakes in search engine optimization (SEO)! – 2022/2023
Most common 7 wordpress error users often face in 2022 and their solutions
The post একজন ফ্রিল্যান্সারের ভবিষ্যৎ কী? কিভাবে সফল ফ্রিল্যান্সার হবো? appeared first on Trickbd.com.
0 মন্তব্যসমূহ