Nothing Phone 2 Full Review
আজকে এই ফোনটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
প্রথমেই এটার কয়েকটা বিষয় আপনাকে বলি Nothing Phone 1 থেকে এটা বড় বড় পরিবর্তন গুলো দেখতে পাবেন। আগের মডেলের রেয়ার প্যানেলটা একদম সোজা এখন সেটা হালকা কার্ভ দেখতে পাবেন। কার্ভ করে দেওয়ার কারনে হাতে ধরে বেশ ভালো একটা ফিল পাবেন। এই নতুন মডেলটি আবার আগের মডেলটির সাথে সাইজেও বড়। এক হাতে অনায়াসেই ব্যাবহার করতে পারবেন। এর স্ক্রিন সাইজটার বড় রাখা হয়েছে এখানে। তাছাড়া এটাতে 200 Mah ব্যাটারি বেশি দেওয়া হয়েছে। তো এই বার ফোনটিতে প্রোসেসর হিসেবে পাচ্ছেন Qualcomm Snapdragon 8+ Gen 1. এছাড়াও লাইটেও বেশি রকমের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে এবং এর UI এর কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি সব কিছুই Nothing Phone 1 এর মতোই।
রেয়ার প্যানেলে কোরনিং গরিলা গ্লাস এর প্রোটেকশন আছে। তবে কোন গরিলা গ্লাস দেওয়া হয়েছে সেটা বলা হয় নি। বডি ফ্রেমটা অ্যালুমিনিয়াম এর তৈরি। পোর্টস এন্ড বাটন সব ঠিক ঠাক থাকলেই নাই কোনো হেডফোন জ্যাক। তবে আমার মতে হেডফোন জ্যাক দিলে কোনো সমস্যা হতো না। ফোনটা বেশ মোটা হওয়ার কারনে হেডফোন জ্যাক দেওয়ার মতো জায়গাও ছিলো।
তো এখন যদি ব্যাক লাইট নিয়ে বলতে চাই তাহলে আগের থেকে এখানেও কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। নতুন কিছু কিছু এনিমেশন তারা দিয়েছে। তারপর এখানে আপনি চার্জিং প্রোগ্রেশটা দেখতে পাবেন চার্জ কতটুকু হলো। তাছাড়াও নোটিফিকেশন এ আলাদা আলাদা রকমের এনিমেশন দেওয়া আছে। এছাড়াও আপনি এই লাইট গুলোকে ক্যামেরার ফিল লাইট হসেবেও ব্যাবহার করতে পারবেন। রিং লাইটের এ রকম আলো মোটামোটি সেরকম একটক ফিল পাওয়া যায়। আর অবশ্যই লাইটের অবস্থানেরো পরিবর্তন আছে।
ফোনটার ডিসপ্লে সাইজ হলো ৬.৭ ইঞ্চি। চিন বা বেজেল ঠিকঠাকই আছে। বেশি মোটাও না আবার বেশি চিকোনও না। এর ডিসপ্লে মূলতো LTPO Oled প্যানেল। এখানে রিফ্রেশ রেটটা উঠানামা করতে পারে। এটাতে ১৬০০ নিট ব্রাইটনেস রয়েছে। ইনডোরেও ভালো দেখা যায় এবং সরাসরি সূর্যের আলোতেও বেশ ভালো দেখা যায়৷ এটাতে ১ বিলিয়ন কালার সাপোর্ট করছে। এই ডিসপ্লেটা আসলেই অনেক ভালো, বেশ স্মুদ, কাজ করতেও ভালো লাগে। এটাতে রিফ্রেশ রেটটা বিভিন্ন আ্যাপ অনুযায়ী উঠানামা করে। যার ফলে ব্যাটারি ব্যাকাপটাও বেশি পাবেন। ওভারল ডিসপ্লেটা ভালো লেগেছে কালার এ্যাকুরেসি মোটামুটি ঠিকই আছে। তবে ভাই এটার যে বাংলাদেশে দাম এই মূহুর্তে ১২/২৫৬ জিবি ভেরিয়েন্ট এর দাম ৭৯ হাজার টাকা। এইটা আবার একদমই অতিরিক্ত হয়ে গেছে। আমি এত দাম দিয়ে এই ফোনটা কিনার পক্ষে একদমই নাই। কিন্তু আপনার অনেকের পছন্দই হতে পারে।
শুরুতেই বলেছিলাম পারফরম্যান্স এর অনেকটা উন্নতি হয়েছে৷ এটাতে প্রোসেসর হিসেবে দেখতে পাবেন Qualcomm Snapdragon 8+ Gen 1 যেটা ৪ ন্যানোমিটার টেকনলোজির উপর বেজ করে তৈরি। এই একই প্রোসেসর আপনার IQOO NEO 7 PRO দেখতে পাবেন৷ এটা আপনারা ৮ জিবি বা ১২ জিবি র্যাম ভেরিয়েন্টে অয়াবেন। স্টোরেজ টাইম UFS 2.1 আর র্যাম টাইপটা হলো LPDDR4. এটাতে Nothing এর নিজস্ব UI দেওয়া আছে Nothing OS 2.0 Android 13. Nothing জানিয়েছে এটাতে ৩ বার ম্যানুয়ালি Update দিবে আর ৪ বছরের সিকিউরিটি সাপোর্ট দিবে। আচ্ছা এই যে প্রোসেসর আর এই যে নতুন UI আমরা দেখছি সব কিছু মিলে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখা গেছে। এর এ্যাএনিমেশন গুলো খুবই জোস ছিলো এবং অনেক ফাস্ট কাজ করছে। যেকোনো আ্যাপ খুব দ্রুতই ওপেন বা ক্লোজ করা যাচ্ছিলো। মানে একদম ফ্লাগশিপ লেভেলের ফোন থেকে আমরা যেমনটা আসা করি ঠিক তেমটাই পারফরম্যান্স দেই এই ফোনটি। আমাদের ব্যাবহারে কখনো ল্যাগ বা আটকে যাওয়া এই রকম সমস্যা দেখতে পাই নি। আবার লং টাইমে ব্যাবহারেও ফোনটা বেশি গরম হচ্ছিলো না। যখন খুব বেশি হেবি কাজ করবেন তখন হালকা কিছু গরম লক্ষা করা গেছে।
এবারের Nothing OS 2 তে অনেক নতুন কিছু পাবেন। স্ক্রিনে ডাবল ক্লিক করলে ফোন লক হয় এটা আমরা সবাই জানি তবে এটাতে স্ক্রিন অফের সময় অনেক সুন্দর এবং ইউনিক একটি এনিমেশন আসে যা আগে কোনো ফোনে এখন পর্যন্ত দেখি নি। আপনি সব আ্যাপ আইকোন গুলোও ব্লাক মুডেও রাখতে পারবেন। তবে কিছু কিছু আ্যাপ নিজস্ব কালারে থাকে এটা দেখে বেশি ভালো লাগে না। সব আ্যাপ এর কালার কালো হয়ে অনেক ভালো লাগতো। আমার কাছে মোটামুটি এই UI টা বেশ ভালো লেগেছে। আমরা আগেও জেনেছি Nothing এর UI টা বেশ ভালো একটা দিল দেই এবং বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি।
তো রেগুলার পারফরম্যান্স তো ভালো পেয়েছিই তার পাশাপাশি গেমিংয়েও বেশ ভালো ফলাফল করেছে এই ফোনটি। লং টাইমেও ফোনটা ভালো পারফরম্যান্স দিচ্ছিলো। তবে অনেক সময় পর পারফরম্যান্স কিছুটা ড্রপ করতে পারে। PUBG, CODM, Genshin Impact, eFootball গেম গুলো থেকেও অনেক ভালো রেজাল্ট আমরা দেখতে পেয়েছি। আমরা PUBG এর ক্ষেত্রে HD & Extreme এ প্লে করতে পারছিলাম। অবশ্যই বলা যাবে না এটা এই বাজেটের সেরা গেমিং ফোন। এই দামে আপনি ROG এর ফোন পেয়ে যাবেন। সেটা গেমিং এর জন্য আরো বেশি ভালো ডিল হবে। এখন যদি IQOO NEO 7 PRO এর সাথে তুলনা করা হয় তাহলে তাহলে IQOO অনেক এগিয়ে থাকবে। কারন IQOO এর দাম Nothing Phone এর থেকে প্রায় ৪০ হাজার কম। কি করা উচিত সেটা আপনি নিজেই ভালো বুঝবেন।
এরপর ক্যামেরা সেকশানে আসি। পেছোনে আগের মতোই দুইটা সেটাপ দেখছি। ৫০ মেগাপিক্সেল এর এবং ৫০ মেগাপিক্সেল এর। তবে মেইন শুটারে এটাতে কিন্তু নতুন সেন্সর থাকছে। পর দ্বিতীয় ক্যামেরার সেন্সরটি আগের ফোনের সেন্সর। এবার মেইন শুটাকে আপনি কালারটা কিছুটা আলাদা দেখতে পাবেন। একটি কন্ট্রাস্টই লাগছিলো আগের থেকে। কালার হালকা বুস্ট হয়ে যায়। ডাইনামিক রেঞ্জটা আগের থেকে অনেক ভালো রেজাল্ট করতে পেরেছে এখানে। কিন্তু কালারটা হালকা বুস্টেড মনে হয়েছে। এই বাইরে লো লাইটেও পিকচার কোয়ালিটি ঠিক ঠাকই ছিলো। ঠিক যেমনিটা Nothing Phone 1 এ পাওয়া যায়।
আর এটাতে আপনি সর্বোচ্চ 4k 30 FPS এ ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। এবং এটাতে ভিডিও বেশ স্ট্যাবল থাকে। তবে ৮০ হাজার টাকা দাম হিসেবে এটা অতোটাও ভালো না।
এই ফোনটা যদি ৫০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যেতো তাহলে সব কিছু একদিন দূর দান্ত হতো। কিন্তু যখন এটার দাম ৮০ হাজার হয়ে যায়। তখন আর কিছু মানা যায় না।
সোজা কথা একটাই Nothing Phone 2 এর দামটা অতিরিক্ত। এই প্রাইজে অনেক ভালো ভালো ফোন পাওয়া যায় মার্কেটে। দাম অনুযায়ী ফোনটা আমার একদমই পছন্দ হয় নি।
The post Nothing Phone 2 Full Review 😲🤔 appeared first on Trickbd.com.
0 মন্তব্যসমূহ