আচ্ছা আপনার জীবনে করার সবচেয়ে সাহসী কাজ কনটি ? হয়তো একা ঘরে কোন ভুতের সিনেমা দেখেছেন।
কিংবা রাস্তায় বন্ধুদের হাত ছেড়ে হুট করে একাই পার হয়ে গেছেন , কিংবা বাসে অশ্লীল দৃষ্টিতে আপনার দিকে তাকানো কোন যুবকের বিরুদ্ধে গলা উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেছেন।
এর মধ্যে যেকোনো একটি হতে পারে আপনার সাহসের গল্প কিন্তু পরিবার সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন কখনো?
তাহলে সেটি ই আপনার প্রকৃত সাহসের গল্প।
১৬ ই জুন ওটিটি তে মুক্তি পেয়েছে সাজ্জাদ খান পরিচালিত সিনেমা সাহস, চলুন আজ সাহস করে কথা বলি সাহস নিয়ে। প্রথমেই আমরা গল্প নিয়ে কথা বলবো বাগেরহাট শহরের নীলা ও রায়হান দুজন দুজনকে দীর্ঘদিন ধরে ভালোবাসে স্বপ্ন দেখে একসাথে ঘর বাঁধার কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এলাকায় একদল প্রভাবশালী মস্তান।
গল্প টা শুনতে হয়তো খুবই সহজ মনে হচ্ছে তবে ততটাই কিন্তু জটিল , ট্রেলারে আমরা দেখেছি একটি ধর্ষণের গল্প একটি সাহসের গল্প সাহস। হয়তো এমন গল্প আপনি হরহামেশাই শুনেছেন। খবরের কাগজে পড়েছেন টেলিভিশনে দেখেছেন। স্ক্রিনে দেখেছেন, কিন্তু উপলব্ধি করেন নি কখনো। সাহস আপনাকে সেই উপলব্ধি করাবে।
বাগেরহাটে যে গল্পটা দেখানো হয়েছে, হয়তো আপনারা এই গল্পটি দেখছেন অথবা টেলিভিশনে দেখছেন, যেটা বলছিলাম কিন্তু এরকম অনেক নীলার ই গল্প আছে যেগুলি আমরা জানতে পারিনা।
তো এই সিনেমাটার মাধ্যমে এই গল্পটার মাধ্যমে যদি আমাদের দেশের একটা নীলা ও সাহস দেখায় তাহলে হয়তো সেখানেই হবে এই সিনেমার সার্থকতা।
এবার একটু স্ক্রিন প্লে নিয়ে কথা বলি।
গল্পের সঙ্গে মিল রেখে স্ক্রিনপ্লে করা হয়েছে, খুব বেশি লেন্ডি করা হয়নি।
যার কারণে একটুও বোরিং লাগবে না আপনার। ক্যামেরার কাজ ও খুবই সাবলীল লেগেছে।
ন্যাচারাল লেগেছে, অতিরঞ্জিত কিছু দেখানো হয়নি।
তবে গল্পের শেষের দিকটায় এসে হয়তো দর্শক এর এক্সপেক্টেশন বেড়ে যাবে।
কারণ যেহেতু টাইটেলে আমরা দেখেছি সাহস।
কিন্তু কিছুটা তাড়াহুড়ো করে হয়তো এখানে ইতি টানা হয়েছে গল্পের। তবে নিঃসন্দেহ সাহসের যারা গল্পকার যিনি।
অনুপম দাস ও চিত্রনাট্যকার হাসান তারা অবশ্যই নিজেদের জায়গায় নিজেদের জায়গাটা দেখিয়েছেন।
সাউন্ড এ ব্যাপারটা আমাদের দেশীয় কনটেন্টে কিছুটা কিন্তু গোলমেলে থাকে।
এখানেও সাউন্ডের অস্বাভাবিক ওঠানামা। চরিত্র রা যখন কথা বলছে।
তখন একটু আপডাউন এর ব্যাপারটা বোঝা গেল।
এবার আমরা ডায়লগ নিয়ে কথা বলবো।
এছাড়াও এই সিনেমার ডায়লগ নিয়ে আলাদা করে কথা বলব কারণ পুরো সিনেমায় একটা আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে নির্মিত হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের বাগেরহাটের ভাষায় নির্মিত হয়েছে *সাহস*
যারা দক্ষিণবঙ্গের তারা হয়তো দেখলেই সহজেই বুঝতে পারবেন।
রি লাইট করতে পারবেন।
যে কারণে অধিকাংশ আর্টিস্ট তারা, সেখানকার স্থানীয় বাগেরহাটের থিয়েটারকর্মী নিয়েছেন।
সবার ভাষাতেই মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে গল্প কারণ আমাদের দেশীয় কন্টাক্ট এ যে কাজটি হয় যে একটি আঞ্চলিক নির্মিত হলে আর্টিস্টরা অধিকাংশ সময় ই ভাষাটা খুব একটা রপ্ত করতে পারে না।
এখানে খুব দারুণ আধিপত্য যেটা বলছিলাম মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন আর্টিস্টরা, তবে কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী অর্ষা।
কোন কোন জায়গায় আঞ্চলিকতা ছেড়ে শুদ্ধ ভাষায় ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় অভিনেত্রী অর্ষার।
তবে পুরোপুরি না হলেও কিছুটা হলো গুরু জঙ্গলে দোষ এখানে ধরা পড়ে অভিনেত্রীর।
যদিও বলতে যদি তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা পড়াশোনার স্থান নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হত। তাহলে কিছু একটা যুক্তি দাঁড় করানো যেত।
আরেকটি বিষয় বলে রাখা ভালো যে গল্পে পছুর আঞ্চলিক গালিগালাজ ব্যবহার করা হয়েছে, যা হয়তো খুবই ন্যাচারাল।
এবং আরো একটি বিষয় বলে রাখতে চাই এই গল্পের ডায়লগ লেখার সঙ্গে কিন্তু জড়িত ছিলেন খোদ অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।
আমরা সবশেষ অভিনয় নিয়ে কথা বলতে চাই।
এককথায় অভিনয় নিয়ে কিছু বলতে হলে বলতে হবে, একদম পারফেক্ট প্রত্যেকটি চরিত্রের স্ক্রিন প্রেজেন্ট চোখে লাগার মত।
মোস্তাফিজুর ইমরানকে পর্দায় অভিনয় করতে দেখা একটা প্রিভিলেজ।
কেন এই মেধা আরো কাজে আসেনি। সেটা ভাববার বিষয়।
এছাড়া ওরসা বরাবরের মতই খুবই সাবলীল ছিলেন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন তবে, আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন নীতি বাচক চরিত্রে কাজ করা তরুণ অভিনেতারা।
এত ভালো কাজ করেছেন যে এক মিনিটের জন্য ও স্ক্রিন থেকে কিন্তু আপনার চোখ সরবে না।
তবে অপ্রয়োজনীয় জন্য লেগেছে। কিছূ টা অপ্রয়োজনীয় বলবো।
খাইরুল বাশার এর চরিত্র অভিনেতা তিনি খুবই ভালো এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই তবে তার স্ক্রীন পেজেন্ট খুবই কম।
এমনকি হার্ডলি একটা কি দুইটা ডায়লগ আছে।
তবে আমরা যদি তাকে গেস্ট হিসেবে ভাবি তাহলে জিনিসটা খুবই সুন্দর দাঁড়ায়।
কিন্তু এত ছোট চরিত্রের প্রচারণায়। তার ছবি বা নাম এত বিশাল আকার এ কেন ব্যবহার করা হয়েছে।
তার এক্সপ্লেনেশন নির্মাতাই দিতে পারবেন।
সবশেষ বলতে চাই তরুণ নির্মাতা সাজ্জাদ খান এর প্রথম সিনেমায় আসলেই সাহসের পরিচয় দিয়েছেন নির্মাতা।
তবে তার কাছে সামনে আরো প্রত্যাশা থাকবে দর্শকের।
এবং আমাদের বিচারে আজকে *সাহস* পাচ্ছে ১০ এর মধ্যে ৮।
সেইসাথে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি দেখা হচ্ছে ঠিক আগামীকাল।
সে পর্যন্ত ট্রিকবিডির সঙ্গেই থাকুন।
The post ২বার নিষিদ্ধ হওয়া অর্ষার সাহসী) ওয়েব সিরিজ এখন Chorki তে | সাহসী ওয়েব সিরিজ বাংলা ক্লিন রিভিউ। appeared first on Trickbd.com.
0 মন্তব্যসমূহ