মোবাইলে পড়তে সমস্যা হলে Desktop মোড চালু করে নিবেন
জীবন বীমা কর্পোরেশন হলো বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বীমা কোম্পানি,যেটি ১৯৭৩ সালের ১৪ মে ইন্সুরেন্স অ্যাক্ট ১৯৩, ইন্সুরেন্স রুলস ১৯৫৮ এবং বাংলাদেশ কর্পোরেশন অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর অধীন ১৫ লক্ষ ৭০ কোটি টাকার ঘাটতি দায় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
জীবন বীমা কর্পোরেশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
জীবন বীমা কর্পোরেশনের ইতিহাসঃ
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ৭৫টি বীমা কোম্পানি ছিল সেগুলোর মধ্যো ১০টি স্থানীয়ভাবে নিবন্ধিত ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৯৫নং আদেশ বলে বাংলাদেশের সকল জীবন ও সাধারণ বীমা কোম্পানি জাতীয়করণ করা হয়। এই জাতীয়করণের দ্বারা অধিকৃত কোম্পানিগুলি বিলুপ্ত করে ৫টি কোম্পানি গঠন করে; বাংলাদেশ জাতীয় বীমা কর্পোরেশন, তিস্তা বীমা কর্পোরেশন, কর্ণফুলি বীমা কর্পোরেশন, সুরমা জীবন বীমা কর্পোরেশন এবং রূপসা জীবন বীমা কর্পোরেশন। ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে সুরমা ও রূপসা জীবন বীমা কর্পোরেশনকে একত্রিত করে জীবন বীমা কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করে।
জীবন বীমা কর্পোরেশনের পলিসিঃ
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ৭৫টি বীমা কোম্পানি ছিল, তারমধ্যে ১০টি স্থানীয়ভাবে নিবন্ধিত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৯৫নং আদেশ বলে বাংলাদেশের সকল জীবন ও সাধারণ বীমা কোম্পানি জাতীয়করণ করে। এই জাতীয়করণের দ্বারা অধিকৃত কোম্পানিগুলি বিলুপ্ত করে ৫টি কোম্পানি গঠন করে; বাংলাদেশ জাতীয় বীমা কর্পোরেশন, তিস্তা বীমা কর্পোরেশন, কর্ণফুলি বীমা কর্পোরেশন, সুরমা জীবন বীমা কর্পোরেশন এবং রূপসা জীবন বীমা কর্পোরেশন। ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে সুরমা ও রূপসা জীবন বীমা কর্পোরেশনকে একত্রিত করে জীবন বীমা কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করে।
ভিশন ও মিশনঃ
কর্পোরেশনের ভিশন:
সকল শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনের ঝুঁকি গ্রহণের মাধ্যমে তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
কর্পোরেশনের মিশন:
জনগণকে সঞ্চয়মুখী করে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং পূঁজি গঠনের মাধ্যমে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অংশগ্রহণ।
যোগাযোগঃ
বীমা সংক্রান্ত প্রশ্ন সমূহঃ
1:বীমা কী এবং কেন প্রয়োজন?
বীমা হলো একটি চুক্তি। ইহা দুই পক্ষের মধ্যে একটি আইন সম্মত চুক্তি। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। অন্যপক্ষ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়াম প্রদানের নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। প্রথম পক্ষ বীমাকারী এবং দ্বিতীয় পক্ষ বীমাগ্রহীতার মধ্যে যথাক্রমে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং প্রিমিয়াম প্রদানের নিশ্চয়তা সম্বলিত একটি চুক্তি। জীবন বীমার ক্ষেত্রে ক্ষতি পূরণ হয় না, মানুষের জীবনের কোন মূল্য পরিমাণ করা যায় না। তাই জীবন বীমার ক্ষেত্রে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
যেকোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বীমা জনসাধারণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় (প্রিমিয়াম) সংগ্রহ করে মূলধন গঠনে সাহায্যে করে। মানুষের জীবন, ঋণ ও সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এরূপ নিশ্চয়তা পাওয়ার ফলে লোকজন তাদের কার্যক্ষেত্রে নিরাপত্তা অনুভব করে এবং কার্যে মনোনিবেশ করতে পারে। ফলশ্রুতিতে, ব্যক্তিক উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এভাবে ব্যক্তিক উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয় এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে। উদাহরণঃ জীবন বীমা চুক্তি,অগ্নি বীমা চুক্তি।
Q.2:
বীমা করলে কী কী সুবিধা?
বীমা করার সুবিধাবলী:
(১) ইহা জীবনের ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয়।
(২) ইহা মূলধন সৃষ্টি করে।
(৩) ইহা বৃদ্ধ বয়সের এবং আপদকালীন সম্বল।
(৪) ইহা মানসিক প্রশান্তি দেয়।
(৫) ইহা ব্যবসায়ে অর্থ যোগান দেয়।
(৬) ইহা মুদ্রা স্ফীতি হ্রাস করে।
(৭) ইহা সামাজিক সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান করে।
3: বীমা করার ধাপ সমূহ কী কী?
বীমা করার ধাপ সমূহ হলো:
বীমা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি অথবা ওয়েব সাইট হতে গ্রাহকের বিভিন্ন পরিকল্প সম্পর্কে অবহিত হওয়া এবং বিভিন্ন পরিকল্প পর্যালোচনা করতঃ পছন্দ মত পরিকল্প নিবার্চন করা।
বীমা গ্রাহকের পছন্দমত পরিকল্প গ্রহণের নিমিত্ত বীমা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করা।
বীমাগ্রাহকের আবেদন ও দাখিলকৃত আনুসাংগিক কাগজপত্র পর্যালোচনা করতঃ বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের অবলিখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
বীমা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির পর বীমা গ্রাহক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ করা।
বীমা গ্রাহক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধের পর বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এফ.পি.আর এর মাধ্যমে বীমা চুক্তি চূড়ান্তভাবে সম্পাদন করা।
বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এফ.পি.আর সম্পাদনের পর গ্রাহক কর্তৃক বীমা দলিল সংগ্রহ করা।
4:প্রিমিয়াম কী?
বীমা চুক্তিতে বীমাকারী বীমা গ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণ বা দাবী পরিশোধের প্রতিশ্রুতির প্রতিদানই হচ্ছে বীমা প্রিমিয়াম। জীবন বীমার ক্ষেত্রে বীমাগ্রহীতা বীমাকারী/বীমা কোম্পানীকে প্রিমিয়াম প্রদানের ফলেই বীমাসংস্থা নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্তিতে বা মেয়াদ পূর্তির আগেই বীমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যু হলে বীমা দাবী পরিশোধ করে থাকে। বিশেষজ্ঞগণের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণে প্রিমিয়ামের সংজ্ঞা নিম্নরূপ:
“বীমাচুক্তি বলে বীমাকারী বীমা গ্রহীতার নিজের বা অন্যের জীবন অথবা সম্পত্তির উপরে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য কোন অনিশ্চয়তা বা বিপদজনিত আর্থিক ক্ষতি লাঘব বা পূরণ করে দেয়া অথবা যথারীতি বীমা দাবি পরিশোধের প্রতিশ্রুতি প্রদানের বিনিময়ে বীমা গ্রহীতার কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে বা নির্দিষ্ট সময় পর পর একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত অথবা এককালীন অর্থ গ্রহণ করে, তাকেই বীমার কিস্তি বা প্রিমিয়াম বলা হয় ।”
জীবন বীমার ক্ষেত্রে সাধারণতঃ বার্ষিক কিস্তিতে প্রিমিয়াম সংগৃহীত হয়ে থাকে। তবে বীমা গ্রহীতার সুবিধার্থে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক এমন কি মাসিক প্রিমিয়াম প্রদানের ব্যবস্থাও রয়েছে।
Q.5:
মোট বীমা অংক কী?
জীবন বীমার বিষয়বস্তু হচ্ছে মানুষের জীবন। জীবনের কোন মূল্য নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই জীবন বীমার ক্ষেত্রে বীমা গ্রাহক নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়ামের বিনিময়ে কোন বীমাকারী প্রতিষ্ঠান যে আর্থিক সুবিধা প্রদান করে, উক্ত আর্থিক সুবিধার পরিমাণকে মোট বীমা অংক বা Sum Assured বলে।
6: প্রিমিয়ামের হার কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?
বীমা আইন, ২০১০ অনুসারে বীমার প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবেন অ্যাকচ্যুয়ারি। যে সমস্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয় তা হলো: বীমা অংক, বীমার মেয়াদ, বীমা গ্রাহকের বয়স, অফিস খরচ, Mortality Table, কমিশন খরচ ইত্যাদি।
7: বীমা পরিকল্প কী?
বীমা ও বীমা গ্রাহকের মধ্যে বীমা কোম্পানী নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে কি কি ঝুঁকি গ্রহণ করবে অর্থ্যাৎ বীমা গ্রাহককে কি কি সুবিধা প্রদান করবে, কি কি সুবিধা প্রদান করবে না, কি কি বিষয়গুলো ঝুঁকির মধ্যে থাকবে না, বিভিন্ন শর্তাবলি ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক অ্যাকচ্যুয়ারি কর্তৃক যে স্কীম তৈরি করা হয়, উক্ত স্কীমকে বীমা পরিকল্প বলে। উদাহরণ: মেয়াদী পরিকল্প, সাময়িক পরিকল্প ।
8: লাভজনক/অলাভজনক/টার্ম পরিকল্প কী?
লাভজনক পরিকল্প: যে জীবন বীমা পলিসির ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে বীমা গ্রহীতাকে বীমাকৃত অর্থের সাথে
লভ্যাংশ বা বোনাস প্রদান করা হয়, তাকে লাভজনক বীমা পলিসি বা লাভজনক পরিকল্প বলে।
অলাভজনক পরিকল্প: যে জীবন বীমা পলিসির ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে বীমা গ্রহীতা শুধুমাত্র বীমাকৃত অর্থ
পেয়ে থাকে, তাকে অলাভজনক বীমা পলিসি বা অলাভজনক পরিকল্প বা বোনাস বিহীন পরিকল্প বল হয়।
এইরূপ বীমা পরিকল্পের প্রিমিয়াম হার খুবই কম হয়ে থাকে।
টার্ম পরিকল্পঃ এরূপ বীমা পরিকল্পে বীমাচুক্তির মেয়াদের মধ্যে বীমা গ্রহীতার মৃত্যু হলেই বীমাকৃত টাকা পরিশোধ করা হয়, মেয়াদের শেষ পর্যন্ত বীমা গ্রহীতা বেঁচে থাকলে কোন আর্থিক সুবিধা প্রাপ্য হন না। এই ধরনের বীমা পরিকল্পনায় প্রিমিয়ামের হার অত্যন্ত কম থাকে।
9: জীবন বীমা কর্পোরেশনে কী কী পরিকল্প রয়েছে?
জীবন বীমা কর্পোরেশনে চালু কৃত বীমা পরিকল্পনা গুলো হলো:
০১. আজীবন বীমা (লাভসহ)
০২. মেয়াদী বীমা (লাভসহ)
০৩. প্রগতিশীল মেয়াদী বীমা (লাভসহ)
০৪. প্রত্যাশিত মেয়াদী বীমা (লাভসহ)
০৫. বহু কিস্তি বীমা (লাভসহ)
০৬. ম্যারেজ এন্ডাওমেন্ট পলিসি
০৭. যুগ্ম মেয়াদী বীমা
০৮. শিশু নিরাপত্তা বীমা
০৯. দ্বৈত নিরাপত্তা মেয়াদী
১০. পেনশন বীমা
১১. স্বাস্থ্য বীমা
১২. একক প্রিমিয়াম পলিসি (লাভসহ)
১৩. ট্রিপল প্রটেকশন পলিসি
১৪. ওভারসিস এসুরেন্স পলিসি (লাভসহ)
১৫. আজীবন বীমা (লাভ বিহীন)
১৬. মেয়াদী বীমা (লাভ বিহীন)
১৭. প্রত্যাশিত মেয়াদী বীমা (লাভ বিহীন)
১৮. ওভারসিস মেডিক্লেইম পলিসি
১৯. স্ব-নির্ভর বীমা (লাভ বহিীন)
২০. সম্পত্তি কর বীমা (লাভ বিহীন)
২১. ছেলে মেয়েদের শিক্ষা ও বিবাহ বীমা (লাভসহ)
২২. নিশ্চিত বোনাস মেয়াদী বীমা
২৩. মানি ব্যাক টার্ম পলিসি (লাভ বিহীন)
২৪. সাময়িক বীমা (লাভ বিহীন)
২৫. স্ব-নির্ভর বীমা (একক প্রিমিয়াম পলিসি)
২৬. দারিদ্র বিমোচনে জীবন বীমা স্কিম
২৭. প্রবাসী বীমা
২৮. জেবিসি মাসিক সঞ্চয়ী স্কিম
২৯. জেবিসি প্রত্যাশিত মাসিক সঞ্চয়ী স্কিম
৩০. সামাজিক নিরাপত্তা বীমা (লাভসহ)
৩১. প্রমিলা ডিপিএস (লাভসহ)
৩২. হজ্জ্ব বীমা (লাভসহ)
৩৩. গ্রামীণ জীবন বীমা (লাভসহ)
৩৪. বন্ধকী নিরাপত্তা বীমা (মর্টগেজ প্রটেকশন পলিসি)
10: বীমা চুক্তি কী?
মানুষের জীবন অথবা সম্পদের সম্ভাব্য ঝুঁকি স্থানান্তরের নিমিত্ত বীমাগ্রহিতা ও বীমাকারীর মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হয় তাকে বীমা চুক্তি বলে। বীমা চুক্তির ক্ষেত্রে বীমাগ্রহিতা নিদিষ্ট মেয়াদে কিস্তি বা প্রিমিয়াম পরিশোধের বিনিময়ে ঝুঁকি স্থানান্তর করে এবং বীমাকারী প্রিমিয়াম গ্রহণের মাধ্যমে নিদিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ঝুঁকি গ্রহণ করে। অর্থাৎ কোন সম্ভাব্য দূর্ঘটনার ফলে যদি বীমাগ্রহিতার সম্পদের ক্ষতি হয় হয়, অথবা জীবনের মৃত্যু অথবা জীবন বীমার মেয়াদ শেষে বীমাগ্রহিতাকে অথবা তাঁর মনোনীতককে বীমাকারী কর্তৃক নির্ধারিত পরিমান অর্থ পরিশোধ করার চুক্তিই হলো বীমা চুক্তি।
11: বীমা প্রস্তাব কী?
বীমা গ্রহণের নিমিত্ত বীমাগ্রহিতা লিখিতভাবে বীমাকারীর নিকট যে আবেদন করে তাই বীমা প্রস্তাব। সাধারণতঃ বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ছাপানো কাগজে বীমা প্রস্তাব করা হয়। যেখানে বীমাগ্রহিতার নাম,পিতার নাম, মাতার নাম, পেশার বিস্তারিত বিবরণ, জন্ম তারিখ, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বীমার তালিকা ও মেয়াদ, বীমা অংক, প্রিমিয়ামের পরিমাণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ পদ্ধতি, আয় ও আয়ের উৎস মনোনীতকের নাম, বয়স, সর্ম্পক, গ্রাহকের স্বাক্ষর, আবেদনের তারিখ, স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে।
12: বীমা চুক্তি করতে হলে বীমাগ্রাককে কী কী তথ্য ও কাগজপত্র দিতে হয়?
বীমা চুক্তি করতে হলে বীমা গ্রাহককে যে সব তথ্য ও কাগজপত্র দিতে হয় তা হলো:-
বীমা গ্রাহকের নাম ও ঠিকানার বিস্তারিত বিবরণ দাখিল করতে হয়।
বীমা গ্রাহকের পেশার বিস্তারিত বিবরণ ক্ষেত্র বিশেষ গ্রাহকের পেশার প্রমাণক দাখিল করতে হয়।
বীমা গ্রাহকের আয়ের বিস্তারিত বিবরণ ক্ষেত্র বিশেষ আয়ের প্রমাণক দাখিল করতে হয়।
বীমা গ্রাহকের পেশাগত ঠিকানা দাখিল করতে হয়।
বীমা গ্রাহকে বয়সের প্রমাণক দখিল করতে হয়।
বীমা গ্রাহক ও মনোনীতকের পাসর্পোট সাইজের ছবি দাখিল করতে হয়।
সুস্বাস্থ্যের প্রমাণক হিসাবে মেডিকেল/ নন মেডিকেল রির্পোট দাখিল করতে হয়।
বড় অংকের বীমা/ বয়স অনুসারে মূত্র পরীক্ষার রিপোর্ট, ECG রিপোর্ট, এক্স-রে রিপোর্ট ও রক্ত পরীক্ষার ভিন্ন ভিন্ন রিপোর্ট দাখিল করতে হয়।
বিদেশে কর্মরত ব্যক্তিদের পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ আগমনের সীলযুক্ত পাসর্পোট পৃষ্ঠা দাখিল করতে হয়।
13: বীমা গ্রাহককে কী কী বিষয় যাচাই করতে হয়?
বীমা গ্রাহককে সাধারনতঃ নিম্নলিখিত বিষয় গুলো যাচাই করতে হয়ঃ-
প্রস্তাবপত্রের সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে কিনা।
বীমা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা বা সামর্থ যথেষ্ট কিনা।
বীমা দলিলে সকল তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে কিনা।
বীমা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধির যথাযথ নিয়োগ পত্র রয়েছে কিনা।
14: প্রিমিয়াম কেন বিনিয়োগ করতে হয়
বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রিমিয়াম আয় থেকে বীমা দাবী, কমিশন, উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাস এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় পরিশোধ করার পর উদ্বৃত্ত অর্থ (যদি থাকে) নিম্নলিখিত কারণে নিরাপদ ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে থাকে:
ক. বীমা দাবী পরিশোধ: সংগৃহীত প্রিমিয়ামের সাথে সুদ, বোনাস ইত্যাদি যুক্ত হয়ে স্বাভাবিক কারণেই বীমা দাবীর পরিমাণ প্রাপ্ত প্রিমিয়ামের তুলনায় অনেক বেশী হয়ে থাকে। তাই প্রাপ্ত প্রিমিয়াম নিরাপদ ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে সম্ভাব্য দাবীর সমপর্যায়ে আনার জন্য প্রিমিয়াম বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই।
খ. আর্থিক ঘাটতি পূরণ: বীমা গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রিমিয়াম পরিশোধযোগ্য বীমা দাবী অপেক্ষা অনেক কম। বীমা দাবীর টাকা সময়মত পরিশোধ করতে যেন কোন আর্থিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়, সে জন্য প্রিমিয়াম বিনিয়োগ অপরিহার্য।
গ. জাতীয় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সহায়তা দান: সরকারী উন্নয়ন কর্মকান্ড, দেশীয় শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং উদ্বৃত্ত উৎপাদন রপ্তানীর মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক শক্তি সুদৃঢ় করার জন্য বীমা শিল্পের সংগৃহীত বিপুল প্রিমিয়াম বিনিয়োগ করা আবশ্যক।
বীমা ব্যবসাতে প্রিমিয়াম বিনিয়োগ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুষ্ঠু ও দক্ষতার সাথে বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার উপর বীমা প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে।
15: এজেন্ট কী এবং এজেন্টের কাজ কী?
এজেন্টঃ যে ব্যক্তি বীমা কোম্পানীর পক্ষে গ্রাহকের কাছে বীমা স্কিম/বীমা পলিসি বিক্রি করে থাকে তাকে এজেন্ট বা বীমা প্রতিনিধি বলে। বীমা প্রতিধি বীমাগ্রাহক ও বীমা কোম্পানীর মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে থাকে। Insurance Act-2010 এর ১২৪ ধারার বীমা এজেন্ট সংক্রান্ত আইন রয়েছে। বীমা এজেন্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইন অনুযায়ী বীমা কোম্পানী হতে কমিশন পেয়ে থাকে।
এজেন্টের কাজঃ জীবন বীমার ব্যবসায় ক্ষেত্রে এজেন্টের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন বীমা প্রতিনিধি বীমা কোম্পানীর পক্ষে নিম্নলিখিত কাজ করে থাকে:
(১) নিয়োগকৃত বীমা কোম্পানীর বীমা পলিসি বিক্রি করা।
(২) সময়মত নবায়ন প্রিমিয়ামের প্রদানে বীমাগ্রাহককে উদ্ধুদ্ধ করা।
(৩) বীমা দাবী পরিশোধে বীমাগ্রাহককে ও বীমা কোম্পানীর সাথে সংযোগ স্থাপন করে থাকে।
উপরোক্ত কার্যাবলী সম্পন্ন করার জন্য বীমা কোম্পানী ও বীমাগ্রাহকের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ কারনে জীবন বীমা ব্যবসা প্রসারের সাথে এজেন্টের কর্মকান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজেন্টের কর্মকান্ড বিশ্বস্ততার সাথে সম্পন্ন হলে বীমার পণ্যসমূহ বিপননে ব্যাপক সফলতা লাভ করবে।
16: সার্ভেয়ার কী এবং কী কাজ করে?
সম্পত্তি বা বীমার সবচেয়ে দুরূহ ও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে Principle of Indemnity বা ক্ষতিপূরণ নীতির সঠিক এবং নির্ভুল প্রয়োগ। এই নীতি বলছে সম্পদ বা সম্পত্তির ক্ষতি হলে যতটুকু ক্ষতি হল ঠিক ততটুকু ক্ষতিপূরণ করতে হবে। কমও না বেশীও না। এই নীতিরই আরও বিস্তৃত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে সম্পদ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি হলে এবং বীমা পলিসিতে ঐ ঝুঁকি গৃহীত থাকলে বীমা কোম্পানী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ততটুকু ক্ষতিপূরণ করবে যাতে করে ক্ষতি হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আর্থিক দিক দিয়ে যে অবস্থায় ছিলেন ঠিক সে অবস্থায় ফিরে যাবেন।
সমস্যা হচ্ছে ক্ষতির প্রকৃত মূল্য ঠিক করবে কে? বীমা কোম্পানী বা বীমা গ্রহীতা। উভয়েই ইন্টারেস্টেড পার্টি। এটা অস্বাভাবিক নয় যে বীমা কোম্পানী চাইবেন ক্ষতির পরিমাণ যত কম করে দেয়া যায় আর বীমা গ্রহীতা চাইবেন দাবীর পরিমাণ যত বেশী করে দেখানো যায়। এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে কোন তৃতীয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। যারা সৎ, নিরপেক্ষ এবং সাধারণ বীমার বিষয়বস্তুর প্রকৃত ক্ষতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ এবং এর সব টেকনিক্যাল দিক জানা আছে, তাকে বা সেরকম কোন প্রতিষ্ঠানকে দাবীর প্রশ্ন উঠলে প্রকৃত ক্ষতি নির্ধারণের দায়িত্বভার অর্পণ করা। সাধারণ বীমা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে তাই করা হয়ে থাকে। যাদের ওপর এই দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়, তাদের বলা হয় সার্ভেয়ার বা জরীপকারী।
সার্ভেয়ার বা জরীপকারীগণ সাধারণ বীমার বিষয়বস্তুর প্রকৃত ক্ষতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ এবং এর সব টেকনিক্যাল দিক সম্পর্কে দক্ষতাসম্পন্ন। সরকার এইরূপ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সনদ প্রদান করে থাকেন এবং সরকারের সনদপ্রাপ্ত সার্ভেয়ারগণই সম্পদ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি হলে বীমা কোম্পানীর নিকট তাদের সার্ভে রিপোর্ট বা জরীপ প্রতিবেদন পেশ করেন। দাবী পরিশোধের ব্যাপারে এই সার্ভে রিপোর্টের মূল্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সার্ভেয়ারদের ভূমিকাও তাই সাধারণ বীমা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
17: বীমাকারী কী ভাবে বীমা দাবি পরিশোধ করে?
বীমা চুক্তির শর্তানুযায়ী কোন অনিশ্চিত সম্ভাবনা বা আকস্মিক ঘটনা সংঘটিত হলে প্রিমিয়ামের বিনিময়ে বীমাকারী সংস্থা কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদানই দাবি। দাবির প্রাপ্যতা বীমা গ্রহীতার আইনসিদ্ধ অধিকার। জীবন বীমার দাবি একমাত্র আইনগত অধিকারীকে পরিশোধ করা হয়। বীমা চুক্তির শর্তানুযায়ী ০২ (দুই) ধরণের ক্ষেত্রে বীমাকৃত অর্থ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করে থাকে।
ক) বীমা চুক্তির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বীমা গ্রহীতার মৃত্যু বা দূর্ঘটনাজনিত অক্ষম হওয়ার ফলে।
খ) নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর বীমা পরিকল্পের ধরণ অনুয়ায়ী বীমাকৃত অর্থ আংশিক বা সম্পূর্ণ অংশ বীমা গ্রহীতা অথবা নমিনীকে বা স্বত্ব নিয়োগকারীকে পরিশোধ করা হয়।
মৃত্যুজনিত বীমা দাবি পরিশোধ/নিষ্পত্তি:মৃত্যুজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতার বৈধ দাবীদারকে নিম্নোক্ত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করতে হয়:
১) বীমা গ্রহীতার মৃত্যুর সময় চিকিৎসারত চিকিৎসকের নিকট থেকে প্রদত্ত মৃত্যুর প্রমাণপত্র, জানাজা/দাহ সনদ, মূল বীমা দলিল, বয়সের প্রমানপত্র।
২) বীমাকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহকৃত দাবিপত্র, সনাক্তপত্র, নিয়োগকর্তার বিবৃতি ও চিকিৎসকের বিবৃতি ফরম পূরণপূর্বক দাখিলকরণ।
বীমা গ্রহীতার বৈধ দাবীদার/নমিনী কর্তৃক বর্ণিত কাগজ-পত্রাদি প্রাপ্তির পর বীমাকারী তার বিধিবদ্ধ মরণোত্তর দাবির নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট ইতিবাচক হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বীমাপত্রের নমিনী বরাবরে নির্বাহী রসিদ প্রেরণ করা হয়।বীমাপত্রের নমিনী যথাযথভাবে নির্বাহী রসিদ পূরণ করে বীমাকারীর নিকট ফেরত দিলে বীমাকারী নমিনীর ব্যাংক এ্যাকাউন্টে এ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক প্রেরণ করা হয়।
মেয়াদোত্তরবীমা দাবি পরিশোধ/নিষ্পত্তি:বীমা গ্রহীতার জীবদ্দশায় বীমা পরিকল্পনা অনুযায়ী বীমার নির্ধারিত সময় সীমা/মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে বীমাকৃত অর্থ প্রদাযোগ্য হওয়াই মেয়াদোত্তর দাবি। মেয়াদপূর্তিজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতাকে নিম্নোক্ত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করতে হয়:
১) বয়সের প্রমানপত্র (যদি পূর্বে বয়স প্রমাণিত না হয়ে থাকে)
২) স্বত্বের প্রমান (যদি স্বত্ব আরোপিত থাকে)
৩) মূল বীমা দলিল।
মেয়াদপূর্তিজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতা বর্ণিত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করলে বীমাকারী বীমা গ্রহীতার বরাবরে নির্বাহী রসিদ প্রেরণ করে।বীমা গ্রহীতা যথাযথভাবে নির্বাহী রসিদ পূরণ করে বীমাকারীর নিকট ফেরত দিলে বীমাকারী বীমা গ্রহীতার ব্যাংক এ্যাকাউন্টে এ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক প্রেরণ করে।
18: বীমাকারী কখন গ্রাহককে বীমা দাবির সাথে বোনাস প্রদান করে?
যদি কোন বীমা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত দায় অপেক্ষা বীমা প্রতিষ্ঠানের তহবিল বেশি হয়, তখন অধিকতর অংশকে উদ্বৃত্ত বলা হয়। এ্যাকচ্যুয়ারী কর্তৃক পরিচালিত ভ্যালুয়েশন প্রক্রিয়া শেষে প্রাপ্ত উদ্বৃত্ত থেকে বীমা প্রতিষ্ঠান বীমা গ্রাহকদের বীমা দাবির সাথে বোনাস আকারে বন্টন করে। তবে, শুধুমাত্র মুনাফাযুক্ত বীমা পরিকল্পেই বোনাস প্রদান করা হয়। এছাড়া পরিশোধিত মূল্যের সাথেও ঘোষিত বোনাস প্রদান করা হয়।
19: তামাদি পলিসি কী এবং কেন তামাদি হয়?
সাধারণতঃ দুই বা তিন বৎসর চালু থাকার পরই পলিসি সমর্পণ মূল্য অর্জন করে। যে সকল পলিসি সমর্পণ মূল্য অর্জন করেনি, ঐ সকল পলিসি প্রথম প্রিমিয়াম ছাড়া পরবর্তী দেয় প্রিমিয়ামগুলো অনুগ্রহকালের (গ্রেস পিরিয়ড) মধ্যে যদি জমা দেয়া না হয়, তবে পলিসি তামাদি হয়ে যায়। এই সকল তামাদি পলিসি পরবর্তী যেকোন সময়ে (৫ বছরের অধিক নয়) কর্পোরেশনের ধার্য্যকৃত সুদসহ বকেয়া প্রিমিয়াম, আনুসঙ্গিক ডকুমেন্টস (যেমন: সুস্বাস্থ্য ঘোষণাপত্র, সংক্ষিপ্ত ডাক্তারী রিপোর্ট, পূর্ণ ডাক্তারী রিপোর্ট) প্রদান সাপেক্ষে চালু করা যায়।
পলিসি নানা কারণে তামাদি হয়। যেমন:
ক. যথাসময়ে বীমার দলিল ইস্যু না করা হলে।
খ. সঠিক সময়ে প্রিমিয়াম ডিমান্ড নোটিশ প্রেরণ না করা হলে।
গ. বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করা না হলে অর্থ্যাৎ পলিসি বিক্রির পর বীমা গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা না করা হলে।
ঘ. প্রশিক্ষণবিহীন বিক্রয় প্রতিনিধি কর্তৃক বীমা গ্রহীতার চাহিদা ও সামর্থ্য মোতাবেক পলিসি বিক্রয় না করা
হলে।
ঙ. বীমা বিক্রেতা/এজেন্ট কর্তৃক বীমা গ্রাহককে অবাস্তব প্রতিশ্রুতি প্রদান (যা পূরণ করা সম্ভব নয়) করা হলে।
চ. বীমাকারীর অফিস থেকে ভালো সেবা না পেলে।
ছ. বীমাগ্রাহক হঠাৎ আর্থিক সমস্যায় পড়লে।
জ. বীমা গ্রাহকের পলিসির চাহিদা পরিবর্তন হলে।
ঝ. বীমাকারীর ঘোষিত পলিসি-বোনাসের হার সন্তোষজনক না হলে।
ঞ. বীমাকারীর সুনাম ক্ষুন্ন হলে।
20: পলিসি তামাদি হলে গ্রাহকের কী ক্ষতি?
১. পলিসি তামাদি হলে বীমা গ্রাহক আর্থিক ক্ষতির সম্মখীন হয়। কেননা, তামাদি পলিসি সমর্পণ মূল্য
অর্জন করে না বিধায় বীমাগ্রাহক তার জমাকৃত অর্থ ফেরত পায় না।
২. পলিসি তামাদি হলে বীমা গ্রাহকের জীবন বীমাবৃত থাকে না। ফলে পলিসি তামাদি অবস্থায় বীমা
গ্রাহকের অকাল মৃত্যু ঘটলে তার নমিনী বীমার কোন সুবিধা পায় না। ফলে বীমা গ্রাহকের নমিনী তথা পরিবার এক অনাগত, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন হয়।
21: সার্ভাইভাল বেনিফিট এবং পেইড-আপ পলিসি কী?
সার্ভাইভাল বেনিফিট (প্রত্যাশিত সুবিধা): যে সমস্ত জীবন বীমা পলিসিতে বীমার মেয়াদ উর্ত্তীনের পূর্বে বীমা চালু থাকলে নির্দিষ্ট সময় পর পর বীমা গ্রাহককে মূল বীমা অংকের শতকরা হারে আর্থিক সুবিধা পরিশোধ করা হয়, উক্ত শতকরা হারে প্রদেয় অংশকে সার্ভাইভাল বেনিফিট বা প্রত্যাশিত সুবিধা বলা হয়। যেমন: তিন কিস্তি বীমা পরিকল্পনা এবং বহু কিস্তি বীমা পরিকল্পনায় বীমা গ্রাহককে নির্দিষ্ট সময় পর পর সার্ভাইভাল বেনিফিট বা প্রত্যাশিত সুবিধা প্রদান করা হয়।
পেইড-আপ পলিসি (পরিশোধিত বীমা): দুই বা তিন বৎসর বীমাপত্র চালু রাখর পর বীমা গ্রহীতা ইচ্ছা করলে নগদ প্রত্যার্পণ মূল্য প্রয়োগে মূল বীমাকে অপেক্ষাকৃত কম টাকার এককালীন প্রিমিয়াম দেয় বীমায় রূপান্তর করতে পারে। এই ধরণের রূপান্তরিত বীমাকে পেইড-আপ পলিসি (পরিশোধিত বীমা) বলা হয়। পরিশোধিত বীমাতে অর্জিত সমর্পণ মূল্য ঐ বীমাটির এককালীন দেয় প্রিমিয়াম হিসেবে ধার্য হওয়ার জন্য পরবর্তীতে আর কোন প্রিমিয়াম প্রদান করতে হয় না। পরিশোধিত বীমা মূল বীমা চুক্তি অনুসারে দাবীতে পরিণত হয়। মুনাফাযুক্ত বীমা পরিকল্পনায় পরিশোধিত বীমা অংকের সাথে ঐ সময়কালের অর্জিত বোনাস বিতরণ করা হয়। পরিশোধিত বীমা হলো বীমার ভবিষ্যত মূল্য। এ পরিশোধিত মূল্য বীমা গ্রহীতা হয় মেয়াদ পূর্তীতে পাবে অথবা মেয়াদকালীন অকাল মৃত্যুতে বীমা গ্রহীতার মনোনীতককে প্রদান করা হবে।
পরিশোধিত মূল্য নির্ণয়ের সূত্র:
বীমার পরিশোধিত মূল্য:
মূল বীমা অংক χ মোট পরিশোধিত বাৎসরিক প্রিমিয়াম সংখ্যা
বীমার মেয়াদ
এর সাথে যোগ করা হবে অর্জিত বোনাস (যদি মুনাফাযুক্ত বীমা পরিকল্পনা হয়)।
22: কম্প্রিহেন্সিভ ও থার্ডপার্টি মটর ইন্স্যুরেন্স কী এবং কোনটির কী কী সুবিধা রয়েছে?
Comphensive Insurance এক ধরনের মোটর গাড়ি ইন্স্যুরেন্স যা গ্রাহকের নিজের গাড়ীর ক্ষতিগ্রস্থ হলে বীমা কোম্পানী ক্ষতি পূরণ দিয়ে থাকে।
Comphensive Insurance কে First Party Insurance বলা হয়ে থাকে। বীমাগ্রাহক তার গাড়ির highest level of Protection পেয়ে থাকে। এই পলিসিটি ঐচ্ছিক পলিসি, গ্রাহকের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
সুবিধাঃ
(১) যানবাহন চুরি হয়ে গেলে Replace or repair ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে।
(২) ক্ষতিগ্রস্থ হলে (Collission ছাড়া) repair ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে।
(৩) আগুনে পুড়ে, গাছ উপড়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলে অথবা শিলা পড়ে নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে।
Third party motor Insurance:
Third party motor পলিসিটি কারো যানবাহন (মটরগাড়ি) দ্বারা অন্যের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেই ক্ষতিগ্রস্থ গাড়িকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াকে Third party motor Insurance বলে। Third party motor Insurance বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক পলিসি।
Third party motor Insurance; Insured (বীমাগ্রাহক)হচ্ছে First party Insurer (বীমাকারী)হচ্ছে Second party, যাকে Claim প্রদান করা হচ্ছে তাকে বলা হয় Third party.
৩য় ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় বলে Third party Insurance বলে।
সুবিধাঃ
বীমাগ্রাহকের গাড়ী দ্বারা অপরের ক্ষতি সাধিত হলে সে ক্ষতিপূরণ বীমাগ্রাহকের পক্ষে বীমা কোম্পানী/ বীমাকারী পরিশোধ করে।
23: রি-ইন্স্যুরেন্স কী এবং এর সুবিধা কী?
কোন বীমাকৃত বিষয়বস্তু বা সম্পত্তি যদি বীমাকারী কর্তৃক পুনরায় বীমাকৃত হয় তবে তাকে রিইন্স্যুরেন্স বা পুনর্বীমা বলা হয়। রিইন্স্যুরেন্স ব্যবসা আন্তর্জাতিক ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত।
আমরা জানি, বীমা কোম্পানী বীমাকৃত বিষয়বস্তু (জীবন) বা সম্পত্তির ঝুঁকি বহন করে, কিন্তু সে ও সব ঝুঁকি একা বহন করে না। যখন সে মনে করে যে তার পক্ষে যতটুকু ঝুঁকি বহন করা সম্ভব ততটুকু ঝুঁকিই গ্রহণ করবে, তখনই সে আর একটি রিইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সংগে পুনর্বীমা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।
সুতরাং কোন বীমা কোম্পানী যে সমস্ত বীমা ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে তার কিছু অংশ (রিটেনশন লিমিট পর্যন্ত) নিজস্ব খাতে রেখে বাকী অংশ অন্য কোন বীমা কোম্পানীর নিকট অর্পন বা হস্তান্তর করাকেই রিইন্স্যুরেন্স বলে। এখানে যে বীমা কোম্পানী তার অতিরিক্ত ঝুঁকি হস্তান্তর করে তাকে সিডিং কোম্পানী এবং যে বীমা কোম্পানী ঐ ঝুঁকি গ্রহণ করে তাকে রিইন্স্যুরেন্স (পুনর্বীমা) কোম্পানী বলে।
বীমা কোম্পানীর আকার বা ফান্ড যাই হোক না কেন, অধিকাংশ বীমা কোম্পানীকে রিইন্স্যুরেন্স এর সুবিধা গ্রহণ করতে হয়, যার কতিপয় কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
ক. একটি বীমা কোম্পানীর ব্যবসা শুরুর প্রারম্ভে এর সম্পদ অত্যন্ত সীমিত থাকে, তথাপি বীমা কোম্পানীকে এই সীমিত সম্পদের মধ্যেও সীমাহীন ঝুঁকি বহন করতে হয়। বীমা কোম্পানী কেবলমাত্র রিইন্স্যুরেন্স এর মাধ্যমে এই সীমাহীন ঝুঁকি বহন করতে সমর্থ হয়।
খ. বীমাকারী/বীমা কোম্পানী নিজ নিজ দায়-দায়িত্ব সীমিত রাখতে পারে।
গ. বীমা কোম্পানীর আর্থিক ক্ষতিকে তার সামর্থ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে সহায়তা করে।
ঘ. রিইন্স্যুরেন্স বীমা কোম্পানীকে তার ব্যবসা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে।
ঙ. রিইন্স্যুরেন্স ছোট বীমা কোম্পানীকে বৃহত্তর বীমা বাজারে প্রবেশ এবং প্রতিযোগিতায় সহায়তাকরে।
চ. রিইন্স্যুরেন্স বীমা কোম্পানীকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকি পরিচালনায় অভিজ্ঞতা অর্জনও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
24: বীমা দাবি প্রাপ্তির আইনগত অধিকার কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
বীমা দাবির প্রাপ্যতা বীমা গ্রহীতার আইনসিদ্ধ অধিকার। জীবন বীমার দাবি একমাত্র আইনগত অধিকারীকে পরিশোধ করা হয়। বীমার মরণোত্তর দাবি প্রাপ্তির আইনগত অধিকার বীমাপত্রের নমিনী। তবে বীমার প্রত্যাশিত সুবিধা (সার্ভাইভাল বেনিফিট) ও মেয়াদোত্তর দাবির আইনগত অধিকার বীমাগ্রহীতার জীবদ্দশায় বীমাগ্রাহক স্বয়ং নিজে।
25: বীমা দাবি প্রাপ্তির জন্য গ্রাহককে কী কী করতে হবে?
বীমা চুক্তির শর্তানুযায়ী গ্রাহক ২ (দুই) ধরণের ক্ষেত্রে বীমা দাবি প্রাপ্য হন। এ বীমা দাবী প্রপ্তির জন্য গ্রাহককে নিম্নোক্ত বিষয়াদি সম্পন্ন করতে হবে:
মৃত্যুজনিত বীমা দাবি প্রাপ্তি: মৃত্যুজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতার বৈধ দাবীদারকে নিম্নোক্ত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করতে হয়:
১) বীমা গ্রহীতার মৃত্যুর সময় চিকিৎসারত চিকিৎসকের নিকট থেকে প্রদত্ত মৃত্যুর প্রমাণপত্র, জানাযা/দাহ সনদ, মূল বীমা দলিল, বয়সের প্রমানপত্র।
২) বীমাকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহকৃত দাবিপত্র, সনাক্তপত্র ও চিকিৎসকের বিবৃতি ফরম পূরণপূর্বক দাখিলকরণ।
বীমা গ্রহীতার বৈধ দাবীদার/নমিনী কর্তৃক বর্ণিত কাগজ-পত্রাদি প্রাপ্তির পর বীমাকারী তার বিধিবদ্ধ মরণোত্তর দাবির নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট ইতিবাচক হলে বীমাপত্রের নমিনী বরাবরে নির্বাহী রসিদ প্রেরণ করা হয়।বীমাপত্রের নমিনীকে যথাযথভাবে নির্বাহী রসিদ পূরণ করে বীমাকারীর নিকট ফেরত দিতে হয়। তখন বীমাকারী নমিনীর ব্যাংক এ্যাকাউন্টে এ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক প্রেরণ করে।
মেয়াদোত্তর বীমা দাবি প্রাপ্তি:বীমা গ্রহীতার জীবদ্দশায় বীমা পরিকল্পনা অনুযায়ী বীমার নির্ধারিত সময় সীমা/মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে বীমাকৃত অর্থ প্রদাযোগ্য হওয়াই মেয়াদোত্তর দাবি। মেয়াদপূর্তিজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতাকে নিম্নোক্ত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করতে হয়:
১) বয়সের প্রমানপত্র (যদি পূর্বে বয়স প্রমাণিত না হয়ে থাকে)
২) স্বত্বের প্রমান (যদি স্বত্ব আরোপিত থাকে)
৩) মূল বীমা দলিল।
মেয়াদপূর্তিজনিত বীমা দাবির ক্ষেত্রে বীমা গ্রহীতা বর্ণিত কাগজ-পত্রাদি বীমাকারীর নিকট দাখিল করলে বীমাকারী বীমা গ্রহীতার বরাবরে নির্বাহী রসিদ প্রেরণ করে।বীমা গ্রহীতা যথাযথভাবে নির্বাহী রসিদ পূরণ করে বীমাকারীর নিকট ফেরত দিতে হয়। তখন বীমাকারী বীমা গ্রহীতার ব্যাংক এ্যাকাউন্টে এ্যাকাউন্ট পেয়ী চেক প্রেরণ করে।
26: ন্যায্য বীমা দাবি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে পরিশোধ না করলে বীমাকারী কী হারে সুদসহ দাবি পরিশোধ করবে?
ন্যায্য বীমা দাবি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে পরিশোধ না করলে বীমাকারী নিম্নোক্তভাবে দাবি পরিশোধ করবে:
(১) বীমাকারী কর্তৃক ইস্যুকৃত পলিসির অধীন অর্থ প্রদেয় হয় এবং দাবী প্রদানের জন্য সমস্ত কাগজপত্র দাবীদার কর্তৃক দাখিল করা হইয়াছে এইরূপ ক্ষেত্রে বীমাকারী যদি দাবি পরিশোধের প্রাপ্য হওয়া বা দাবীদার কর্তৃক সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা পূরণের, যা পরে সংঘঠিত হয়, ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহা হইলে উপ-ধারা (২) এ নির্ধারিত সুদ পরিশোধ করিবে, যদি বীমাকারী এইরূপ ব্যর্থতা তাহার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত ছিল বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সুদ ব্যর্থতাজনিত চলমান সময়ের জন্য পরিশোধযোগ্য হইবে এবং প্রচলিত ব্যাংক রেটের অতিরিক্ত শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগ হারে মাসিক ভিত্তিতে হিসাব করিতে হইবে।
27: ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক প্রতিকারের জন্য কোথায় অভিযোগ দাখিল করবে?
যদি কোন বীমা গ্রহীতা মনে করেন যে তিনি তার দাবির সঠিক প্রাপ্যতা পাননি, সেক্ষেত্রে তিনি ইচ্ছা করলে বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ম্যানেজিং ডিরেক্টর) বরাবরে দাবির অর্থের বিষয়ে পুনঃ বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারেন। এছাড়া, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA) এর নিকট আবেদন করতে পারেন। বীমা অংকের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমাদান সাপেক্ষে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রয়ণকারী কর্তৃপক্ষ (IDRA) এর নিকট মামলা দাখিলও করতে পারেন।
28: জীবন বীমা কর্পোরেশনে চালুকৃত পলিসি/পরিকল্পের সুবিধাসমূহ কি কি?
জীবন বীমা কর্পোরেশনের ওয়েভ সাইটে কর্পোরেশনের প্রদত্ত প্রত্যেক পলিসি/পরিকল্পের সুবিধাসমূহের স্পস্ট বর্ণনা রয়েছে।
যেকোন প্রকার পেইড কোর্স,ব্লগার থিম পেতে ভিজিট করুনঃ Tunes71.com
The post জীবন বীমা কি? বীমা সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্তর সমূহ appeared first on Trickbd.com.
0 মন্তব্যসমূহ